.
ন্যাটো সদস্য হওয়ায় অতীতে এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন সহায়তা পাওয়া যেত। কিন্তু উচ্চমূল্যে রাশিয়া থেকে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম (S-400) ক্রয়ের কারণে মার্কিনিরা ছাড়াও ন্যাটো জোট ক্ষিপ্ত। এমনকি অ্যামেরিকা চুক্তিকৃত সর্বাধুনিক যুদ্ধ বিমান (F-35) সরবরাহ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
.
তুরস্ক ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ ঋণ গ্রহীতা। ২০১৪-২০২০ সময়ে Pre-Accession Support হিসেবে ৪.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ পেয়েছিল https://ec.europa.eu/neighbourhood-enlargement/instruments/funding-by-country/turkey_en। কিন্তু ২০২১-২০২৭ পরিকল্পনায় তুর্কির জন্য বরাদ্দ বাতিল করা হয়য়েছে।https://ahvalnews.com/eu-turkey/eu-plans-cut-financial-assistance-turkey
.
তুরস্কের এমন পরিস্থিতিতে টিকে থাকার পেছনে একমাত্র ভূমিকা রেখেছে কাতার। দেশটি তুরস্ককে ১৫ বিলিয়ন ডলার থোক বরাদ্দ ও বিভিন্ন নন-রিফান্ডেবল সহায়তা দিয়েছে https://www.forbes.com/sites/dominicdudley/2018/08/16/qatar-repays-debt-turkey-15b-support/#3b71e1c69f59। কিন্তু সিরিয়া ও লিবিয়ায় তুরস্কের অত্যাধিক ব্যয়ের কারণে কাতারও সহায়তার রেশ টেনে ধরেছে।
.
আপাতত শেষ অবলম্বন হিসেবে দেশটি চীন থেকে ১ বিলিয়ন ডলার উন্মুক্ত ঋণ নিয়েছে https://www.bloomberg.com/news/articles/2019-08-09/turkey-got-1-billion-from-china-swap-in-june-boost-to-reserves। সাথে Industrial and Commercial Bank of China থেকে ৩.৬ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছে। কোনো রাষ্ট্র অপর দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করা লজ্জাজনক বিরল দৃষ্টান্ত।
.
আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে- ইউরোপের সাথে চীনের সম্পর্ক বরাবরই দূর্বল। অমিত শক্তিধর দেশে পরিণত হওয়ার পথে চীন খাদে পড়া তুরস্ককে কাছে টেনে নিয়েছে এনেছে। “বেল্ট অ্যান্ড রোড” বিনিয়োগ কৌশল হিসাবে চীনের বিভিন্ন কর্পোরেশন তুর্কি অবকাঠামো উন্নয়নে কয়েক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এই বিনিয়োগ ২০২১ সালের মধ্যে দ্বিগুণ দ্বিগুণ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
.
এহেন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে উইঘুররা দেখতে পান- তুরস্ক তারা আর স্বাগত নয়। তাদেরকে রেস্তোঁরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে; বাসা, রাস্তা় এবং যে কোনও জায়গায় তাদের পাওয়া যেতে পারে সেখানে মাঝরাতে অভিযান চালিয়েছে। বিনা অভিযোগে গ্রেপ্তার করে কয়েক মাস ধরে ডিপোর্টেশন ক্যাম্পে রাখা হয়েছে।
প্রায় ৫০,০০০ উইঘুর বিভিন্ন উপায়ে পালিয়ে তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছিল। এখন তাদেরকে তুরস্ক থেকে চীনে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। তবে, সরাসরি চীনের নিকট হস্তান্তর করার পরিবর্তে তাজিকিস্তানের মাধ্যমে পাঠানো হচ্ছে।
.
তুরস্কে প্রথমে উইঘুরদের শনাক্ত করে ইজমিরের একটি ক্যাম্পে নিয়ে রাখা হয়। এরপর তাদেরকে তাজিকিস্তানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখান থেকে তাদেরকে চীনে ফিরিয়ে নেয়া হয়। চীনের আহ্বানে তাজিকিস্তান সহজেই সাড়া দেয়। ফলে, ঝামেলা ছাড়াই পালিয়ে যাওয়া উইঘুরদের আবার ফেরত নেয় চীন।
.
উইঘুরদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। পালিয়ে আসা উইঘুরদের চীন হুমকি মনে করে। চীনের দমন পীড়নের খবর বিশ্বের কাছে পৌঁছানোর একমাত্র উপায় এই উইঘুররা। পালিয়ে আসা উইঘুরদের মধ্যে যারা যারা অত্যাচার নিয়ে মুখ খোলেন তাদেরকে প্রথম টার্গেট করা হয়।
.
এমন একজন ছিলেন এনভার তুরদি। তিনি চীনা সরকারের কার্যক্রম নিয়ে পশ্চিমা গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। তখন তাকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য তুরস্কের কাছে নাম পাঠায় চীন। এক পর্যায়ে তাকে তুর্কি কর্মকর্তারা জেরা এবং পরবর্তিতে নির্বাসিত করে এবং সর্বশেষে চীনে ফেরত নেয়া হয়েছে।
.
টেলিগ্রাফের কাছে উইঘুররা জানিয়েছেন, তারা ভয় পাচ্ছেন তুরস্ক তাদেরকে তাজিকিস্তান হয়ে চীনে পাঠিয়ে দেবে। দুই সন্তানের মা আলমুজি কুয়ানহান চীন থেকে পালিয়ে তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাকে চীনে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
......
তথ্য সূত্র -
২। https://thediplomat.com/2019/10/erdogans-chinese-gamble/
৩। https://www.bbc.com/news/world-asia-china-30810439
৪। https://www.nytimes.com/2019/12/21/world/asia/xinjiang-turkey-china-muslims-fear.html
৫। https://www.middleeasteye.net/news/uighurs-china-turkey-accused-deporting-third-countries
৬। https://indianarrative.com/world/wannabe-caliph-erdogan-dumps-uighurs-for-china-money-2413.html
৭। https://www.ft.com/content/caee8cac-c3f4-11e9-a8e9-296ca66511c9
৯। https://www.wionews.com/world/why-erdogan-has-decided-to-extradite-uighurs-to-china-316326
- Mohammad Salimullah
ফেসবুক পেজ - https://www.facebook.com/KHalidOfficialBnEn/
No comments:
Post a Comment